ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ক্ষুধার্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়বে বাজেট ব্যবসাবান্ধব গ্যাস কূপ খনন বাড়াতে কেনা হবে নতুন রিগ ঈদ উপলক্ষে সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করলো রেলওয়ে ঈদে অভ্যন্তরীণ রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান চাঁদাবাজি ও এক হাটের পশু অন্য হাটে নিলে কঠোর ব্যবস্থা- র‌্যাব শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ২৫ পুলিশভ্যানে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা ৪ গাড়ি খাদে ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমাল সরকার ঋণের বোঝা কমাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য কমাল সরকার এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা ব্যয় তামান্নার উজ্জ্বল ত্বকের গোপন টিপস এক সিনেমায় দুই ক্লাইম্যাক্স! পাকিস্তানে টিকটকারকে গুলি করে হত্যা এবার এক সিনেমাতেই সাতটি চরিত্রে দেখা যাবে ইধিকাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় অভিনেত্রী তানিন সুবহা এবার ঈদে মুক্তি পাচ্ছে নতুন ৭ সিনেমা এবার ঈদে মুক্তি পাচ্ছে নতুন ৭ সিনেমা প্রকাশ পেলো ‘তাণ্ডব’ এর ২য় গান বিশেষ ভাতা পাবেন হাওর-চর দ্বীপ এলাকার শিক্ষকরা

ইতিহাসের ৫৩ বাজেট ও অর্থমন্ত্রীরা যে বক্তব্যে আলোচিত-সমালোচিত

  • আপলোড সময় : ০৩-০৬-২০২৫ ০৫:৪৪:০৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০৬-২০২৫ ০৫:৪৪:০৪ অপরাহ্ন
ইতিহাসের ৫৩ বাজেট ও অর্থমন্ত্রীরা যে বক্তব্যে আলোচিত-সমালোচিত
বাজেট শব্দটির উৎপত্তি হয় ‘বুজেট’ থেকে। বুজেট ফরাসি শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে মানিব্যাগ বা টাকার থলি। যদিও বাজেট ইংরেজি শব্দ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। ১৭২০ সালে প্রথম বাজেট ও রাজস্বনীতি উত্থাপন করেছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী রবার্ট ওয়ালপুল। তবে, বুজেট বা টাকার থলিকে বাজেটে রূপ দেয়া হয়েছিল ১৭৩৩ সালে, যুক্তরাজ্যে রাজা দ্বিতীয় জর্জের সময়ে। তখন যুক্তরাজ্যে চরম আর্থিক সংকট চলছিল। ওই সময়ে রবার্ট ওয়ালপুল নানা মহল থেকে কর সংক্রান্ত যত দাবি বা প্রস্তাব পেতেন, তা তার বুজেট বা মানিব্যাগে রেখে দিতেন। তারপর যখন আনুষ্ঠানিকভাবে কর প্রস্তাব উত্থাপনের সময় এলো, তিনি মানিব্যাগ থেকে সবকিছু বের করে একটা প্রস্তাব তৈরি করে তা পার্লামেন্টে উত্থাপন করলেন। সেটিই ছিল বিশ্বের প্রথম বাজেট। আর ভারত উপমহাদেশের প্রথম বাজেট দিয়েছিলেন জেমস উইলসন। স্কটিশ এই ব্যবসায়ী ছিলেন ইন্ডিয়া কাউন্সিলের ফিন্যান্স মেম্বার। সিপাহি বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বের অবসান হয়। সরাসরি ব্রিটিশদের শাসন শুরু। সিপাহি বিদ্রোহের অবসানের তিন বছর পর জেমস উইলসন ১৮৬০ সালের ৭ এপ্রিল উপমহাদেশের প্রথম বাজেটটি পেশ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ পূর্ববাংলা প্রদেশে প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন বসে জগন্নাথ হলের হলঘরে। সেখানেই ১৯৪৮-৪৯ সালের প্রথম বাজেট পেশ করেন পূর্ববাংলার অর্থমন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী। ওই অর্থবছরে বাজেটের আকার ছিল সাড়ে ৪১ কোটি টাকা। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমেদ ৭৮৬ কোটি টাকার প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন। তিনি ১৯৭২ সালের ৩০ জুন একইসঙ্গে ১৯৭১-৭২ ও ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। এ পর্যন্ত ৫৩ বার বাজেট ঘোষণা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার বাজেট দিয়েছেন এক সময়ের চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে আসা বিএনপির অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। দুজনেই ১২ বার করে বাজেট ঘোষণা করেন। তবে, টানা ১০টি বাজেট দেয়ার রেকর্ড শুধু মুহিতের। গতকাল সোমবার বিকেলে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থাপন করেন। যেহেতু সংসদ নেই তাই বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের মাধ্যমে বাজেট বক্তব্য সম্প্রসার করা হয়েছে। তিনি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার ৫৪তম বাজেট উপস্থাপন করেন। তবে বিভিন্ন সময় বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রীদের বক্তব্য নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। অনেকে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। অর্থমন্ত্রীদের অনেকে না ফেরার দেশে চলে গেলেও তাদের কথামালা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে। অর্থমন্ত্রীদের আলোচিত কিছু বক্তব্য পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো-মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অর্থনীতিবিদ হিসেবে ১৯৭২ সালের ৩০ জুন ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রথম বাজেট ঘোষণা করেন তাজউদ্দিন আহমেদ। ওই সরকারের সময় তিনি চারবার বাজেট পেশ করেছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ সালের বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, গত অর্থবছর ছিল আমাদের জাতীয় জীবনের এক কঠিন পরীক্ষা ও সুমহান আশার ফল। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে তাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, সততা, নিয়মানুবর্তিতা, বাস্তবানুগ উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন ও কঠোর পরিশ্রমের আজ বড় প্রয়োজন। এ কথা সবার মনে রাখা দরকার, শুধু সেøাগান দিয়ে সমাজতন্ত্র কায়েম করা যায় না, দুর্নীতি দূর হয় না, শুধু বুলি আউড়িয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যায় না। এতে শুধু সাধারণ জনগণকে সর্বকালের জন্য ধোঁকা দেয়া চলে। ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপ-প্রধান ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান বলেন, জাতি হিসেবে আমরা কেবল সঞ্চয় করাই শিখব না। আমাদেরকে অপচয় করার প্রবণতাও পরিহার করা শিখতে হবে। সরকারি খাতের কিছু সংস্থার অতিমাত্রার অপচয় ও সম্পদের অপব্যবহার গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে এম সাইফুর রহমান বলেন, বিগত স্বৈরশাসনের আমলে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়। সরকারের অর্থ ব্যবস্থাপনা, বাজেট পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সকল বিধি ও নৈতিকতা ক্রমান্বয়ে ভেঙে পড়ে। ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি নিম্ন আয় ও নিম্ন প্রবৃদ্ধির আবর্তে বন্ধ হয়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রবৃদ্ধি অতি শীর্ণ ও উন্নতির পরিমাণ নগণ্য। ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এম সাইফুর রহমান বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে সুদক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে সরকারের নাম নেই। যেখানে সরকার একচেটিয়া বিনিয়োগের অধিকারী সে ক্ষেত্রে এ কথা আরও সত্য। ২০০৩-০৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নিকট থেকে একটি অত্যন্ত নাজুক ও ভারসাম্যহীন অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আমরা পেয়েছিলাম। এম সাইফুর রহমান ২০০৬-০৭ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা দেয়ার মাধ্যমে সর্বাধিক ১২টি বাজেট ঘোষণা দেন। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় শাহ এ এম এস কিবরিয়া বলেন, অর্থনৈতিক সংস্কার কোনো দিনই সবাইকে সংশ্লিষ্ট করতে পারে না। কায়েমি স্বার্থে আঘাত না করে কোনো প্রকৃত সংস্কারই সম্ভব নয়। ২০০০-০১ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেন, এ সত্য কোনো প্রকারেই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, গত চার বছর ধরে বাংলাদেশের যে হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, এত উঁচুমানের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশে এর আগে কখনোই সম্ভব হয়নি। শাহ এম এস কিবরিয়া তৃতীয় সর্বোচ্চ ছয়বার বাজেট ঘোষণা দেন। ২০০৭-০৮ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও সত্তরের দশকের প্রথমার্ধ থেকে এ পর্যন্ত সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রা থেমে যায় ২০০১ সালে। বিএনপি জোট সরকার শাসিত এ সময়ে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য ও সীমাহীন দুর্নীতি জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি আসলে কর্মশক্তি পাই আমার প্রবল তথা শোভনীয় আশাবাদে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরের পরে ২০০৯-১০, ২০১০-১১, ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০ বারসহ মোট ১২ বার বাজেট পেশ করেছেন। সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১২তম দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে তার প্রথম বাজেট পেশ করেন। অর্থমন্ত্রী প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বাজেট বক্তৃতা পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নজির। ২০১৯ সালের ১১ জুন বিকেল সাড়ে ৩টায় অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতা শুরু করার পর শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি বারবার থেমে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পরপর তিনি সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে বিরতি নেন। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা হয়েছিল ১১ জুন, যা ছিল মুস্তফা কামালের দ্বিতীয় বাজেট। মাত্র ৫০ মিনিটে শেষ হয় ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপন। আগের সব বাজেট উপস্থাপনে অর্থমন্ত্রীর তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো লেগেছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বাজেট উপস্থাপন হয়। আর অধিবেশনও বাংলাদেশের ইতিহাসে সংক্ষিপ্ততম। মাত্র নয় দিনের বাজেট আলোচনা ছিল। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদের ত্রয়োদশ বাজেট পেশ করেন। ওই বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক অভিঘাত মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যখন অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্রুত গতিতে অর্থনৈতিক উত্তরণের পথে এগিয়ে চলছিল। তখনই সারাবিশ্বে দ্বিতীয়, কোথাও কোথাও তৃতীয় অভিঘাত শুরু হয় এবং যার প্রভাব সর্বত্রই প্রবল। তাই আমাদের এবারের বাজেটেও দেশ ও জাতির উন্নয়নের পাশাপাশি প্রাধিকার পাচ্ছে দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষ-প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবন জীবিকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট উপস্থাপন করেন। ওই অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ওই অর্থবছরে বাজেটের বিশাল ব্যয় মেটানোর জন্য অর্থ সংগ্রহে নতুন একটি পথ খুঁজে বের করেছেন। বিদেশ থাকা সম্পদের ‘দায়মুক্তি’ দিয়ে তিনি তা দেশে আনার ঘোষণা দেয়া হয়। ১৫ থেকে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দেশে সরকারের খাতায় বৈধ আয়ের তালিকায় যুক্ত করা যাবে, সেই অর্থ দেশেও আনা যাবে বলে জানানো হয়। এমনকি ওই আয়ের উৎসও জানতে চাওয়া হবে না। এ ধরনের সুযোগ দেয়ায় বিষয়টি নিয়ে নানা মহল থেকে বেশ সমালোচনা হয়েছিল। বাস্তবেও ওই ধরনের সুযোগে দেশে টাকা ফেরত এসেছিল কি না, তার কোনো অফিসিয়াল তথ্য জানা যায়নি। অন্যদিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এই বাজেট পেশ করেন মুস্তফা কামাল। যা ছিল অর্থমন্ত্রী হিসাবে পঞ্চম ও তার শেষ বাজেট। যার সেøাগান ছিল ‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা‘। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রথমবারের মতো সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার ৫৩তম বাজেট উপস্থাপন করেন। ওই বাজেটে সেøাগান ছিল সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার। বাজেটটি ২০২৪ সালের ৬ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যা পাস হয় ৩০ জুন। ওই বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত বক্তব্যের মধ্যে ছিল-অঘোষিত অর্থ বা কালো টাকা মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা ও অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করা হবে না এমন প্রস্তাবনাটি। যা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সিপিডিসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই এমন প্রস্তাবকে অবৈধ, বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেছিলেন। তবে সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ঘটনা ছিল বাজেট উপস্থাপনের পরের দিন। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীসহ বাজেট পরবর্তী একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সাংবাদিকদের ব্যাংকে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সাংবাদিকরা তার বক্তব্য বর্জন করেন। এই ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলে বিভিন্ন মিডিয়ায় এবং তৎকালীন সরকারও বিব্রত হয়েছিল। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট আজ দুপুর ৩টায় উপস্থাপন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজকের বাজেট হবে দেশের ৫৪তম এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম বাজেট। বাজেটের আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এবারে মোট বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি হতে যাচ্ছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। আর রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি অর্থায়ন ও রাজস্ব আদায়ই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স